কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার একটি ঐতিহাসিক স্থান "গোসানিমারি " আর এই গোসানিমারিকে নিয়ে রয়েছে অনেক রহস্য। এই গোসানিমারিতেই রয়েছে কামতারাজ্যের রাজবাড়ি যেটি বর্তমানে রাজপাট নামে পরিচিত। রাজপাট থেকে কিছুটা দূরেই রয়েছে গোসানিমারি আর এই গোসানিমারিতেই রয়েছে প্রাচীন কামতেশ্বরী মায়ের মন্দির যার পরিচিত নাম গোসানী দেবীর মন্দির।
গোসানিমারি মন্দিরের ইতিহাস :-
গোসানিমারি মন্দিরের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক মত পার্থক্য রয়েছে --গোসানিমারি গ্রামের প্রবীণ নাগরিক দের কাছ থেকে জানা যায় মন্দিরটি মা কামতেশ্বরীর আদেশে বিশ্বকর্মা এক রাত্রি তে তৈরী করেছিলেন। নবীনদের মতে মন্দির টি কোচবিহারের মহারাজা প্রাণনারায়ণ ১৬৬৫খ্রিস্টাব্দে তৈরি করেন।
কোচবিহারের ইতিহাস ঘেটে জানা যায়, সেই সময় মৈথিলী ব্রাহ্মণ ছাড়া মন্দিরের পূজা করা যেত না আবার খুব সহজে মৈথিলী ব্রাহ্মণ পাওয়া যেত না। মহারাজ এই মন্দিরের পূজা আর্চার জন্য মৈথিলী ব্রাহ্মণ খুঁজতে চারিদিকে তার সৈন্য পাঠালেন কিন্তূ কোথাও মৈথিলী ব্রাহ্মণ পাওয়া গেলনা। মহারাজ পরম দুঃশ্চিন্তায় পরলেন। ঠিক সেই সময় এক মৈথিলী ব্রাহ্মণ তীর্থ ভ্রমণের জন্য উপস্থিত হন গোসানিমারি বন্দরে। মহারাজ তার সম্পর্কে স্বপ্নে জানতে পারেন এবং পরের দিনই সেই ব্রাহ্মণ কে ডেকে মন্দিরের পুজোপাঠ করার কথা বলেন ব্রাহ্মণ প্রথমে না করলেও পরে রাজি হয়ে যান।তিনি খুব নিষ্ঠা সহকারে মন্দিরের পুজো করতে লাগলেন। তিনি একদিন তার একমাত্র কন্যাকে মন্দিরের বাইরে বসিয়ে রেখে মায়ের পুজো করতে থাকেন , পুজো শেষে তিনি তার কন্যাকে দেখতে না পেয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করেন কিন্তু তাঁকে আর পাওয়া যায়নি। ব্রাহ্মণ মন্দিরে মায়ের সামনে অনেক কান্নাকাটি করেন এবং দেখেন তার কন্যার পরনের চেলি টি মায়ের গায়ে এই দেখে ব্রাহ্মণ প্রচন্ড রেগে যান এবং মন্দিরের পুজো না করে মন্দিরের দেখাশোনার দায়িত্ব নেন। সেই থেকে বড়দেউড়ি হিসেবে মন্দিরের কার্যভার বহন করছেন।
বর্তমানে মন্দিরটি দেবোত্তর ট্রাষ্ট বোর্ড এর অধীনে রয়েছে।


0 comments:
Post a Comment
দয়াকরে কোনো প্রকার খারাপ মন্তব্য করবেন না।